মোবাইলে চার্জ থাকে না? জেনে নিন তার প্রতিকার
অনেক দাম দিয়ে আপনার প্রিয় মোবাইল ফোনটি কিনেছেন। অথচ চার্জ থাকে না। সম্পূর্ণ চার্জ দেয়ার পরও তা একদিন পর্যন্ত টিকে না। আবার অনেকেই আছেন যারা ২০ থেকে ৩০ মিনিট পর্যন্ত মোবাইলফোনটি চালাইলে চার্জ শেষ হয়ে যায়। কি কারণে এমন হচ্ছে তা অনেকেই খুঁজে পান না। যদিও মোবাইল ফোনে ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে এমনটি হয়ে থাকে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হয়। মূলত কয়েকটি কারণে এই ধরনের সমস্যা হয়ে থাকে।
এগুলো হল- *ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়ার *ব্যাটারী সমস্যা *সময়মতো অ্যাপস আপডেট না রাখা *নির্দিষ্ট কিছু অ্যাপস ব্যাটারীর চার্জ বেশি খরচ করে। তবে সাধারণ কিছু অভ্যাসের মাধ্যমে ব্যাটারির চার্জ বেশি সময় ধরে রাখা যায়। ব্যাটারির চার্জ একটু বেশি সময় ধরে রাখতে খুব অল্প সময়ে এ ধরনের পরিবর্তন আনা যেতে পারে।
ব্যাটারীর যত্ন নিন: ব্যাটারীর চার্জ সব সময় ৪০ শতাংশ থেকে ৮০ শতাংশ এর মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। ঘন ঘন চার্জ দিন, তবে চার্জ দেয়াটা যেন আবার অতিরিক্ত পর্যায়ে চলে না যায়। চার্জ কমে গেলে যেমন চার্জ দেবেন কিন্তু মাঝেমধ্যে আবার ব্যাটারির চার্জ সম্পূর্ণ শেষ করে ফেলবেন।
চলমান অ্যাপ্লিকেশন বন্ধ করা : বেশিরভাগ সময়ই দেখা যায় কোনো একটি প্রোগ্রাম চালিয়েছেন কিন্তু বন্ধ না করে অন্য একটি প্রোগ্রাম চালাচ্ছেন। এভাবে দিনের পর দিন টাস্কে অনেক অ্যাপ্লিকেশন জমা পড়ে থাকে। তাই এগুলোকে ক্লিয়ার করার একটি সহজ উপায় আছে। এই প্রক্রিয়াটি একেক ফোনে একেক রকম থাকে। তবে বেশিরভাগ এন্ড্রয়েড ফোনের ‘মেনু’ বাটনটি চেপে ধরলে সব চলমান অ্যাপস এর তালিকা আসবে এবং ডানে কিংবা বামে ড্রাগ করে ছেড়ে দিলেই সেটা চলে যাবে। আইফোনের ক্ষেত্রে ‘হোম’ বাটনটি চেপে পরপর দুইবার চাপলেই চলমান অ্যাপস এর তালিকা আসবে এবং ডানে কিংবা বামে ড্রাগ করে ছেড়ে দিলেই সেটা চলে যাবে।
ব্রাইটনেস কমিয়ে রাখা : ফোনের ব্রাইটনেস বাড়িয়ে রাখলে চার্জ বেশি ফুরোয়। ফোনের সেটিংস থেকে এটি পরিবর্তন করা যায়, আবার কোনো কোনো মোবাইলে ব্রাইটনেস পরিবর্তনের জন্য শর্টকাট কি-ও থাকে।
প্রয়োজন ছাড়া সব বেতার সংযোগ বন্ধ :জিপিআরএস/এজ, জিপিএস, ওয়াই-ফাই, ব্লুটুথের মতো বেতার সংযোগগুলো প্রয়োজনের সময় ছাড়া বন্ধ রাখা উচিত। কারণ, এই সংযোগগুলো চালু থাকলে সেগুলো নিকটবর্তী সংযোগের উৎসটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করতে থাকে। আর এই সময়ে যে পরিমাণ ব্যাটারি খরচ হয়, তা সেবা ব্যবহারের সময়ের চেয়েও বেশি।
পুশ নোটিফিকেশন বন্ধ রাখা : ই-মেইল, ফেসবুক, গুগল প্লাস, টুইটারসহ আরও বিভিন্ন ধরনের অ্যাপলিকেশনে ‘পুশ নোটিফিকেশন’ নামের একটি সুবিধা থাকে। যেটি চালু থাকলে মোবাইল ফোনটি একটি নির্দিষ্ট সময় পর পর সার্ভার থেকে নতুন তথ্য সংগ্রহ করে। ফলে প্রয়োজন না থাকলেও নির্দিষ্ট সময় পর পর ফোনটি নিজের মতো করে কাজ করবে, আর চার্জ খরচ হবে।
পাওয়ার সেভার অ্যাপস: কিছু অ্যাপস আছে যেগুলো আমরা প্রয়োজন ছাড়াই চালিয়ে রাখি অথবা আমাদের অজান্তেই এই অপ্রয়োজনীয় অ্যাপসগুলো চলতে থাকে। তাই এইগুলো বন্ধ করার দুইটি উপায় আছে, একটি হলো মোবাইলের বাই-ডিফল্ট অ্যাপ্লিকেশন ম্যানাজার থেকে এগুলোকে ডিজ-অ্যাবল করা। এই প্রক্রিয়াটি অনেকের কাছেই জটিল মনে হতে পারে। তবে সহজ আরও একটি উপায় আছে সেটা পাওয়ার সেভার অ্যাপস ব্যবহার। এই অ্যাপসটির মাধ্যমে চলমান অ্যাপস এর তালিকাটি দেখতে পাবেন এবং সেই অনুযায়ী বন্ধ রাখতে পারবেন।
ভাইরাস কিংবা ম্যালওয়ার: ফোনে ভাইরাস থাকলেও এই ধরনের সমস্যা হতে পারে। তাই কোন একটি এন্টিভাইরাস দিয়ে ফোনটি ক্লিন করে দেখুন।
ব্যাটারী সমস্যা: কখনো কখনো ফোনের ব্যাটারী অনেক বেশি গরম হয়ে যায় কিংবা তারাতারি ১০০ শতাংশ চার্জ দেখায়। ব্যাটারী অনেক পুরনো হয়ে গেলে এমনটি হতে পারে। তাই সম্ভব হলে ব্যাটারীটি পরিবর্তন করে নিন। আবার কখনো কখনো নতুন ফোনেও এই সমস্যা হয়। এক্ষেত্রে প্রথমে ব্যাটারীটি খুলে ৫ মিনিট রেখে দিয়ে আবার লাগিয়ে দেখতে পারেন। ব্যাটারীর চার্জারের কারণেও এমনটি হতে পারে। তাই চার্জারটি পরিবর্তন করে দেখুন।
সময়মতো অ্যাপস আপডেট রাখুন : কিছু দিন পরপরই দেখবেন বিভিন্ন অ্যাপসগুলোর আপডেট আসছে। অ্যাপস এর বাগমুক্ত করা ও নতুন ফিচার যুক্ত করার জন্য সাধারণত আপডেট পাঠানো হয়। তাই এগুলো আপডেট রাখুন।
সব সময় নিজস্ব চার্জার : স্মার্টফোনে চার্জ দেয়ার সময় নিজস্ব চার্জার বিশেষ করে ফোনের সঙ্গে থাকা আসল চার্জারটি ব্যবহার করুন। স্মার্টফোনে মাইক্রো ইউএসবি পোর্টে অনেক চার্জার সমর্থন করতে পারে। তবে আসল চার্জার ব্যবহার না করলে ধীরে ধীরে ব্যাটারির চার্জ ধরে রাখার ক্ষমতা কমে যাবে।
সারা রাত চার্জ দেবেন না : অনেকেই আছেন যারা ফোন চার্জে লাগিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন, যা ঠিক নয়। অতিরিক্ত চার্জ ব্যাটারির ক্ষতি করে।
মোবাইলফোন ৮০ শতাংশ চার্জ দিয়ে রাখুন :যখনই চার্জ দেবেন, তখন কমপক্ষে ব্যাটারির চার্জ ৮০ শতাংশ পূর্ণ করবেন। সব সময় শতভাগ চার্জ পূর্ণ করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।
সব চার্জ শেষ করে ফেলবেন না : স্মার্টফোনে ২০ শতাংশের ওপরে চার্জ থাকা অবস্থায় আবার চার্জে দেবেন না। বারবার ও অপ্রয়োজনীয় রিচার্জে ব্যাটারির আয়ু কমে যায়। ব্যাটারির চার্জ একেবারে শূন্য করে ফেলবেন না। এতেও ব্যাটারির আয়ু কমতে থাকে।
Comments
Post a Comment